Collection of Bengali Short Stories
বেণীবন্ধন – গল্প সংকলন
বেণীবন্ধন সম্পর্কে বলছেন ভিন্নমুখ পত্রিকার সম্পাদক কবি চিত্তরঞ্জন হীরা
ভাবছি, অনেকবার ভেবেছি এবং আরও একবার ভাবলাম – মানুষ কেন লেখে?
নিজেকেও প্রশ্ন করি বারবার – কী লিখি আমরা? কেনই বা লিখি? অজন্তার গোপন সত্তায়ও যখন এ প্রশ্নের আলোড়ন হয়, তখন যেন দেখতে পাই লেখকের পাঠকসত্তা এবং পাঠকের লেখকসত্তা একাকার হয়ে বসে আছে। এই সত্য প্রবহমান। প্রতিটি সৃষ্টিই তাই আত্মজীবনীর অংশ। এভাবে শুধু আত্মার উণ্মেষ নয়, মানবিক মূল্যবোধও এক একটা বার্তা নিয়ে এসেছে গল্পের পরতে পরতে। ট্রিটমেন্ট – প্রতিটি গল্পই শুভসংকেতবাহী। পজেটিভনেস গল্পের প্রধান সুর।
“অরাজক রমণীয়তায় একমুঠো রোদ্দুর” নিয়ে একজন কবির ভেতরের টানাপোড়েনগুলো যখন গল্পে মনস্তাত্ত্বিক হয়ে ওঠে, তা উজ্জ্বল এবং অবশ্যই রমণীয়। নির্জন পাঠক নিঃশব্দে এক শিহরন জাগিয়ে দেয় প্রতিটি রোমকূপে। “পোয়েট্রি নিড্স আ রিডার অ্যান্ড অ্যাপ্রিসিয়েশান”… কবি-কবিতা-পাঠকের সহাবস্থান প্রত্যাশী কণা কণা আলো এবং আমার দেখা অন্ধকারের মাঝখানে কাব্যঘরটি গল্পের। আহা! গল্পের।
“গোল্লাছুট ভাতের গরাস” – এও রয়েছে সত্য ও বাস্তবের ফাঁকে পুরে দেওয়া এক জটিল মনস্তত্ত্ব। ভাষার চলন ছাড়া বাকিটুকুতে জগদীশ গুপ্তকে মনে পড়িয়ে দেয় বারবার।
“রূপঝরা যত অরূপকথার বৃত্তান্ত” – এর যাত্রাটা খুব সরল গতিতে শুরু হলেও ক্রমশ কবিতার ভেতরেই টেনেছে। মাঝে মাঝেই শব্দরা নদী আর নদীর চড়ায় পলি পড়া উর্বরতা, আঙুলে অপেক্ষা করে থাকে শব্দস্রোত, বিষাদপাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে চুপকথা আর জ্যোৎস্নাগন্ধ। শেষপর্যন্ত গল্প ও জীবন মিলিয়ে শিশুর মধ্যে বড় হয়ে ওঠার মহত্ত্ব। যেন বলছে এক একটা শিশুই পারে বড়দের দুটি মনের ফাঁক ও কাঁটাতারের দূরত্ব ঘুচিয়ে দিতে।
“পুতলির বিয়ে” – একটি বুক ছোঁয়া নরম গল্প। হয়তো তেমন কোনো ঝাঁকুনি নেই, চমকে দেওয়ার মত কোনো ক্লাইমেক্স নেই। হয়তো জরুরি ছিল, তবু মনে লেগে থাকে।
“তরাসজনিত” – অনেক আঁটোসাঁটো গল্প। পারফেকশানে সে বোধহয় সবার থেকে এগিয়ে। ভাষার ক্ষেত্রেও তেমন ক্রিটিক না হলেও চলে। শেষটা তো চমকে দেওয়ার মত।